বিগ ইজ বিউটিফুল !
নান্দাইল নিউজ ডেক্স :
পাত্রীর দাবি একটাই, ‘আমার বর যেন আমায় কোলে তুলে নিয়ে আদর করে।’ নিজের এই শর্তের কথা জানিয়ে নিজেই প্রায় অট্টহাস্য করে উঠলেন
‘হেভিওয়েট’ পাত্রী সারান আলেকজান্ডার।
পাত্র-পাত্রীর বিজ্ঞাপনের ভাষায়: পাত্রী
৬ ফুট। ওজন ২০৫ কিলো। নামী-দামী ক্রীড়াবিদ। দেশে-বিদেশে ঘোরেন। নাম উঠেছে গিনেস বুকেও। ডিভোর্সি, তিন সন্তানের জননী। সন্ধান করছেন মনের মতো পাত্র। পাত্রের ওজন ১৫০ কেজি
বা তার কম হলেও চলবে। কিন্তু উচ্চতা সাড়ে ৬ ফুটের কম হলে চলবে
না।
নিজের বিয়ের বিজ্ঞাপনের খসড়া নিজেই বানিয়ে
হো হো করে হেসে উঠলেন সারান আলেকজান্ডার। সেই হাসিতে এক দরাজ
দিল মহিলার জীবন সংগ্রাম যেমন লুকিয়ে রয়েছে, তেমনই রয়েছে চাপা দুঃখ। তবে তাঁর জীবন দর্শনই
হল, ‘নো রিগ্রেট। ওনলি হ্যাপিনেস।” তাই প্রায় পঞ্চাশে পৌঁছেও নতুন করে ঘর বাঁধতে চান বিশ্বের সবচেয়ে
ভারি মহিলা ক্রীড়াবিদ, মহিলা সুমোর বিশ্ব
চ্যাম্পিয়ন।
সম্প্রতি ইংল্যান্ড থেকে ২০তম অসম শিল্প ও
বাণিজ্যমেলার বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে এই মহিলা সুমো কুস্তিগীর প্রথম বারের মত ভারতে পা
রাখলেন। তার সঙ্গী ছিলেন আমান্ডা উইলকক্স।
অন্য কোনও খেলায় না গিয়ে সোজা জাপানিদের
মৌরসীপাট্টায় এলেন কেন? সারান আলেকজান্ডারকে
একথা জিজ্ঞেস করলে তার সোজা উত্তর, ‘আসলে আমার সব
ঢেকে যায় ওজনেই। উচ্চতা ৬ ফুট আর ওজন গড়ে দুশোর আশপাশে থাকে। আপনিই বলুন, আর কোন খেলায় এই ওজন নিয়ে নাম করতে পারতাম?’
ব্যবসায়ী স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে তিন
সন্তানকে মানুষ করার জন্য সুমো কুস্তির অবলম্বনটাকেই খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরেন ২০০৫
সাল থেকে। পরের বছরেই ২৫ জন কুস্তিগীরকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। তাল মিলিয়ে বাড়াতে থাকেন ওজন। তার সৌজন্যেই গত বছর
২০৫ কেজি ওজন-সহ বিশ্বের সবচেয়ে ভারি মহিলা ক্রীড়াবিদের গিনেস রেকর্ড।
“কিন্তু ওজন মানেই ডায়াবেটিস আর হৃদরোগের ষোলো আনা সম্ভাবনা। তাই প্রশিক্ষকের নির্দেশ মেনে ব্যয়াম বাড়াই। খাওয়া কমাই। অনেকটাই রোগা হয়েছি এক বছরে। এখন মাত্র ১৮০ কিলো!” সারান খেতে ভালবাসেন
ভেড়া, স্যালাড, কলা। বেশি খান রাতে। গোটা দিনের খোরাকি
মোটামুটি ৫ হাজার ক্যালোরি। কুস্তির পাশাপাশি তাঁর
পেশা, শুনতে অবাক লাগলেও, বাচ্চা সামলানো। বলাই বাহুল্য,
তাঁর চেহারা দেখে বাচ্চারা ভয়েই কাত, দুষ্টুমি করার প্রশ্নই নেই। তাঁর নিজের ছোট ছেলেও ইতিমধ্যে এস্তোনিয়ায় ছোটদের সুমোয় অংশ নিয়েছে।
ভারতে প্রথমবার পা দিয়ে, বিমানবন্দর থেকে গুয়াহাটি অবধি রাস্তার দুই পাশে তাঁর দৈত্যাকার
হোর্ডিং দেখে দিলখুশ হয়ে গিয়েছে। সারান মজা করে বলেন,
‘কাজিরাঙা যাওয়ার সুযোগ পেলে ভাল হত। হয়ত উদ্যোক্তারা ভয় পাবেন আমায় নিয়ে যেতে। আমি কিন্তু, হাতিতে চেপেছি আগে। উটের পিঠেও উঠেছি। হাতি-উট দুটিই কিন্তু এখনও সুস্থ।”
মণিরাম দেওয়ান ট্রেড সেন্টারে প্রথম দিনের
লড়াই শেষে দর্শকদের মনোরঞ্জন করা বিরাট কালো শরীরটা এ বার বিশ্রাম চায়। শেষবেলায় হাত নেড়ে বলে গেলেন, “পাত্র দেখতে
থাকুন। এই দেশে হলেও চলবে। মনে রাখবেন,
আমি বৃহদাকার হতে পারি, কদাকার নই। বিগ ইজ বিউটিফুল।”
(সূত্র - সময় বিডি.কম)